ক্ষীরার বাম্পার ফলন, চলনবিলে কৃষকের মুখে হাসি

ক্ষীরার বাম্পার ফলন, চলনবিলে কৃষকের মুখে হাসি

চলনবিলের পরিচিতি সিরাজগঞ্জের শস্যভান্ডার হিসেবে। জেলার তাড়াশ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে করা হয়েছে ক্ষীরার আবাদ। অন্যান্য অর্থকরী ফসলের পাশাপাশি চলতি বছর ক্ষীরার বাম্পার ফলন হওয়ায় ও দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।

সরেজমিন দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত কোহিত, সাচানদিঘি, সান্দুরিয়া, সড়াবাড়ি, বারুহাস, দিঘুরিয়া, দিয়ারপাড়া, তালম সাতপাড়া, নামো সিলট, খাসপাড়া, বড় পওতা, তেঁতুলিয়া, ক্ষীরপোতা, খোসালপুর, বরগ্রাম, বিয়াস আয়েস, পিপুলসোন গ্রামের মাঠের পর মাঠ ক্ষীরার আবাদ হয়েছে। নিজের জমি না থাকলেও অনেক কৃষক লাভের আশায় জমি লিজ নিয়ে ক্ষীরার আবাদ করেছেন। চলনবিলে ব্যাপক ক্ষীরা উৎপাদন হওয়ায় শুধু তাড়াশের দিঘুরিয়া, রানীর হাট ও কোহিতসহ ১৫টি গ্রামে গড়ে উঠেছে ক্ষীরা বিক্রির অস্থায়ী আড়ৎ।


তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলনবিলের বিস্তীর্ণ মাঠে এ বছর ক্ষীরার বাম্পার ফলন হয়েছে। তাড়াশ উপজেলা ৩৩০ হেক্টর জমিতে ও চলনবিলের সিংড়া, চাটমোহর, গুরুদাসপুর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, চাটমোহর উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ক্ষীরা চাষ হয়েছে।


তাড়াশ উপজেলার বারুহাসের দিরিয়া গ্রামের কৃষক ফরজ আলী ও কৃষক মফিজ উদ্দিন জানান, এ বছর এক বিঘা জমিতে ক্ষীরার আবাদ করতে খরচ হয়েছে ২৫-৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদে আবাদে ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। গত বছর প্রতি বস্তা (৩০কেজি) খিরার দাম ৮০-৯০ টাকা বিক্রি করা হয়েছিল এবছর প্রতিবস্তা ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা উৎপাদিত ক্ষীরার দাম বেশি পেয়ে খুব খুশি। উপজেলার স্থানীয় আড়তদাররা প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি ট্রাক লোড করে ক্ষীরা পাঠাচ্ছে ঢাকা ও চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।


তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের দিঘুরিয়া ক্ষীরার আড়ৎ-এর ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শামসুল জানান, তাড়াশের দিঘুরিয়া ক্ষীরার আড়ৎ থেকে মৌসুমের সময় স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক ক্ষীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, পাবনা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে চলে যাচ্ছে।


তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চলনবিলে ক্ষীরা চাষে কৃষকরা ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। কৃষকেরা ক্ষীরা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। কৃষকেরা বিঘাপ্রতি খরচ বাদে ৪০-৪৫ হাজার টাকা করে লাভ করছেন। এভাবে তারা আগামীতে ক্ষীরা চাষে আরও উদ্যোগী হবেন।